Ekramul Haque Titu
Ekramul Haque Titu
Mayor, Mymensingh City Corporation President, Mymensingh Mohanagar Awamileague
Ekramul Haque Titu

Blog

News

News

প্রধানমন্ত্রীর আগমন উপলক্ষে ময়মনসিংহে উৎসবের আমেজ

Dhaka Post Desk

উবায়দুল হক, ময়মনসিংহ  

০৯ মার্চ ২০২৩, ০৪:৩১ পিএম-


দীর্ঘ চার বছর পর শনিবার (১১ মার্চ) ময়মনসিংহ আসছেন বঙ্গবন্ধুকন্যা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রীর এ আগমনকে ঘিরে ময়মনসিংহ সেজেছে নবরূপে। নগরীর প্রতিটি সড়ক ও মহাসড়কজুড়ে এখন তোরণের ছড়াছড়ি। রঙিন ব্যানার, ফেস্টুন আর বিলবোর্ডে সেজেছে পুরো নগরী। প্রধান প্রধান সড়ক ছাপিয়ে অলিগলিতেও শোভা পাচ্ছে বঙ্গবন্ধুকন্যাকে স্বাগত জানিয়ে পোস্টার-ব্যানার-প্যানাফ্লেক্স। বর্ণিল আলোকসজ্জা ও রং-তুলির আঁচড়ে নগরী যেন নতুন সাজে সজ্জিত হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (৯ মার্চ) ময়মনসিংহ নগরীর প্রবেশপথ শিকারিকান্দা থেকে নগরীর মাসকান্দা বাইপাস, চরপাড়া, মাসকান্দা, নতুনবাজার, গাঙ্গিনারপাড়, টাঙ্গাইল বাসস্ট্যান্ড, কাচিঝুলি, টাউনহল মোড়সহ নগরীর বিভিন্ন সড়ক ঘুরে দেখা গেছে এমন চিত্র।

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এই জনসভাকে ঘিরে দলীয় প্রধানের দৃষ্টি কাড়তে কয়েক কোটি টাকার তোরণ, ব্যানার আর প্যানাফ্লেক্স নির্মাণ করেছেন দলটির নেতাকর্মী ও মনোনয়নপ্রত্যাশীরা। ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশনের মেয়র ও মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ইকরামুল হক টিটুর উদ্যোগে নগরীজুড়ে পাঁচ শতাধিক বিলবোর্ড, ব্যানার-ফেস্টুন, তোরণ শোভা পাচ্ছে। এছাড়া প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানিয়ে মেয়রের অনুসারীরাও পাঁচ হাজারের বেশি ব্যানার-ফেস্টুন টাঙিয়েছেন। এর বাইরে স্থানীয় আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগসহ বিভিন্ন অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরাও প্যানাফ্লেক্স, ব্যানার-ফেস্টুন ও তোরণে প্রধানমন্ত্রীকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।

শনিবার ঐতিহাসিক সার্কিট হাউস ময়দানে আওয়ামী লীগের জনসভায় ভাষণ দেবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেখানে প্রায় ১৫ লাখ লোক সমাগমের টার্গেট নিয়েছে স্থানীয় আওয়ামী লীগ। বসে নেই দলটির অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরাও। দিনরাত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন দলটির শীর্ষ নেতাকে বরণ করে নিতে। প্রধানমন্ত্রীর আগমন উপলক্ষে ইতোমধ্যে পৃথক বর্ধিত সভা করেছে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগসহ অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনগুলো। আওয়ামী লীগের উদ্যোগে নগরীর প্রতিটি সড়কে দিনরাত চলছে মাইকিং। রেকর্ড জনসমাগম ঘিরে ‘ময়মনসিংহের মাটি আ.লীগের ঘাঁটি’ পুরোনো এই প্রবাদ আবারো নতুন করে প্রধানমন্ত্রীর সামনে তুলে ধরতে চান নেতাকর্মীরা।

ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশনের মেয়র ও মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. ইকরামুল হক টিটু বলেন, দেশের সার্বিক খাতে অভূতপূর্ব উন্নয়নে দেশবাসীর কাছে আস্থা অর্জন করেছেন জননেত্রী শেখ হাসিনা। বিশেষ করে প্রধানমন্ত্রী ময়মনসিংহকে বিভাগসহ অবকাঠামোগত উন্নয়নে বদলে দিয়েছেন। আর এ কৃতজ্ঞতা থেকেই দলীয় সভানেত্রীকে স্বাগত জানাতে আমরা সর্বোচ্চটুকু করছি। আশা করছি জনসভায় ১০ থেকে ১৫ লাখ লোকের সমাগম ঘটতে যাচ্ছে।

dhakapost

তিনি আরও বলেন, জননেত্রী শেখ হাসিনার আগমনে এই অঞ্চলের সাংগঠনিক অবস্থা আরও শক্তিশালী হবে এবং নেতাকর্মীদের মনোবল চাঙা হবে। যা আগামী নির্বাচন পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে। জনসভায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রী যে দিকনির্দেশনা দেবেন তা তৃণমূল পর্যায়ে পৌঁছে দিতে সক্ষম হব। যা আমাদের দলকে সুসংগঠিত করা এবং আগামী নির্বাচনে বিজয়ী করার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এহতেশামুল আলম জানান, নৌকার আদলে সমাবেশের মঞ্চ তৈরি হচ্ছে। মঞ্চের কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। সমাবেশের জন্য সকাল থেকে রাত অবধি প্রচার-প্রচারণা চলছে। এটিকে স্মরণকালের সর্ববৃহৎ জনসভায় রূপ দিতে আমরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করছি। এছাড়া নেত্রীর আগমনের খবরে উচ্ছ্বসিত গোটা ময়মনসিংহবাসী।

জেলা প্রশাসক মোস্তাফিজার রহমান বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানাতে সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। এই সফরে প্রধানমন্ত্রী কী কী উন্নয়ন প্রকল্প উদ্বোধন ও ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন তার তালিকা করে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পাঠানো হয়েছে। ফিরতি নির্দেশনা এখনো পাওয়া যায়নি।

নিরাপত্তায় ৩ হাজার পুলিশ

ময়মনসিংহ জেলা পুলিশ সুপার মাছুম আহাম্মদ ভুঞা বলেন, প্রধানমন্ত্রীর সমাবেশকে কেন্দ্র করে কয়েক স্তরের নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। সাদা পোশাকের গোয়েন্দা তৎপরতাও বাড়ানো হয়েছে। নিরাপত্তায় প্রায় ৩ হাজার পুলিশ সদস্য মোতায়েন থাকবে। জেলা পুলিশের পাশাপাশি বাইরের জেলা থেকেও এখানে পুলিশ আসবে। প্রধানমন্ত্রীর সমাবেশ মঞ্চের প্রথম সারিতে নিরাপত্তায় থাকবে এপিবিএন। ট্র্যাফিকের জন্যও বিশেষ ব্যবস্থা রাখা হচ্ছে। আমরা আশা করছি, সমাবেশকে ঘিরে দশ লাখ লোকের সমাগম হবে। সাধারণ মানুষের যেন কোনো ভোগান্তি না হয় সেজন্য ট্র্যাফিক ব্যবস্থাপনায় বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, গ্যাস সিলিন্ডারের যেসব দোকান রয়েছে সেগুলোতে বিশেষ নজর রাখা হচ্ছে। নিরাপত্তার প্রশ্নে যেসব বিষয় জড়িত প্রত্যেকটি বিষয়কে অত্যন্ত গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। নিরাপত্তার প্রশ্নে আমরা কোনো ছাড় দেব না। আমরা চাই নিরাপত্তার পাশাপাশি এখানে জনসমাবেশ স্থলে আগত জনগণ যেন উৎসবমুখর পরিবেশ পায়।

জনসভায় বিশেষ ৮ ট্রেনে আসবে জনতা

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সফর উপলক্ষে ময়মনসিংহ থেকে ৮টি রুটে বিশেষ ট্রেন চালানোর সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। রেলওয়ের সহকারী চিফ অপারেটিং সুপারিনটেনডেন্ট (পূর্ব) কামাল আখতার হোসেন স্বাক্ষরিত এক পত্রে গত মঙ্গলবার বার্তাটি জারি করা হয়। চিফ অপারেটিং সুপারিনটেনডেন্টের (পূর্ব) পক্ষে তিনি বার্তাটি জারি করেন।

এতে বলা হয়েছে, আগামী ১১ মার্চ ময়মনসিংহ জেলায় যাতায়াতের জন্য গফরগাঁও-ময়মনসিংহ, নান্দাইল-ময়মনসিংহ, দেওয়ানগঞ্জ বাজার-জামালপুর-ময়মনসিংহ, নেত্রকোণা-ময়মনসিংহ, অ্যাডভোকেট মতিউর রহমান-ময়মনসিংহ, গৌরীপুর-ময়মনসিংহ, ঈশ্বরগঞ্জ-ময়মনসিংহ, জারিয়া-ঝাঞ্ঝাইল-ময়মনসিংহ রুটে ৮টি স্পেশাল ট্রেন চালানোর সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে। উক্ত বিশেষ ট্রেনগুলো সকাল সাড়ে ৮টা থেকে ১০টার মধ্যে সব স্টেশন থেকে ময়মনসিংহের উদ্দেশ্যে ছেড়ে আসবে।

উল্লেখ্য, ২০১৮ সালের ২ নভেম্বর ময়মনসিংহ নগরীর ঐতিহাসিক সার্কিট হাউস ময়দানে শেষবারের মতো জনসভায় ভাষণ দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দীর্ঘ চার বছর পর আবারো এই নগরীতে আসছেন বঙ্গবন্ধুকন্যা। তাই গণমানুষেরও উৎসাহ-উদ্দীপনার যেন শেষ নেই। সবার দৃষ্টি এখন সার্কিট হাউস ময়দান।

এমজেইউ